আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় Piramed পিরামেড ওষুধের যাবতীয় তথ্য। বাংলাদেশে পাওয়া যায় এরকম বিভিন্ন ওষুধের তথ্য আপনাদের কাছে পৌছে দিতে আমাদের এই আয়োজন।
Piramed পিরামেড ওষুধের যাবতীয় তথ্য
উপাদান:
টোপিরামেট আইএনএন। ২৫ মি.গ্রা. এবং ২০০ মি.গ্রা. ফিল্ম কোটেড ট্যাবলেট ।
নির্দেশনা:
শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্ক উভয়েরই মৃগী রোগের চিকিৎসায় এ ওষুধ ব্যবহৃত হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে এ ওষুধ লেনক্স গেস্টেট্ সিনড্রোমের চিকিৎসায়ও ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে মাইগ্রেন প্রতিরোধে এ ওষুধ খুব বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। মনোচিকিৎসকরা বাইপোলার ডিসঅর্ডার এবং এলকোহল আসক্তির চিকিৎসায় এ ওষুধ ব্যবহার করে থাকেন। এ ওষুধ আঘাত পরবর্তী তীব্র চাপ এবং ইনফ্যানটাইল স্পাজমের চিকিৎিসায়ও ব্যবহৃত হয়।
মৃগী রোগে- শুধু টোপিরামেট ১০ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী আংশিক অথবা প্রাথমিক ও সাধারণভাবে সংঘটিত টনিক-ক্লনিক সিজারের রোগীদের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র টোপিরামেট নিয়ে চিকিৎসা শুরু করা যেতে পারে।মৃগী রোগে- অন্য ওষুধের সাথে টোপিরামেট ২-১৬ বছর বয়সী শিশু অথবা প্রাপ্ত
বয়স্কদের যাদের আংশিকভাবে সংঘটিত অথবা প্রাথমিক বা সাধারণভাবে সংঘটিত টনিক-ক্লনিক সিজার রয়েছে এবং ২ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী রোগী যাদের লেনক্স গেস্টট্ সিনড্রোম সহকারে সিজার রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে অন্যান্য মৃগীরোধী ওষুধের সাথে টোপিরামেট নির্দেশিত।মাইগ্রেন মাইগ্রেনজনিত মাথাব্যথা প্রতিরোধে প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে টোপিরামেট নির্দেশিত।
মাত্রা ও ব্যবহারবিধি:
টোপিরামেটের প্রাথমিক মাত্রা সাধারণত স্বল্প এবং ধীরে ধীরে এর মাত্রা বাড়াতে হয় । সাধারণত প্রাথমিকভাবে দৈনিক ২৫ মি.গ্রা. থেকে ৫০ মি.গ্রা. ২টি একক মাত্রায় টোপিরামেট দেয়া হয়। প্রতি ১/২ সপ্তাহে ২৫-৫০ মি.গ্রা. বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
চিকিৎসা চালিয়ে নেয়ার সাধারণ মাত্রা হচ্ছে দৈনিক ১০০-২০০ মি.গ্রা.। সর্বোচ্চ সম্ভাব্য দৈনিক মাত্রা হচ্ছে ১০০০ মি.গ্রা. বিভক্ত মাত্রায়। এককভাবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্কদের (১০ বছর বা তদুর্ধ) সুপারিশকৃত টোপিৱামেটের সর্বোচ্চ মাত্রা দৈনিক ৪০০ মি.গ্রা.- ২ টি বিভক্ত মাত্রায় ।
অন্য ওষুধের সাথে ব্যবহারের ক্ষেত্রে:
momta বয়স্ক (১৭ বছর বা তদুর্ধ): আংশিকভাবে সংঘটিত অথবা প্রাথমিক বা সাধারণভাবে সংঘটিত সিজারের ক্ষেত্রে: দৈনিক সর্বমোট ৪০০ মি.গ্রা. টোপিরামেট- বিভক্ত মাত্রা।দৈনিক ১৬০০ মি.গ্রা. এর বেশি টোপিরামেট ব্যবহারের কোন তথ্য নেই।
শিশু (২-১৬ বছর): আংশিকভাবে সংঘটিত অথবা প্রাথমিক বা সাধারণভাবে সংঘটিত টনিক-ক্লনিক সিজারের ক্ষেত্রে: শিশুদের জন্য সুপারিশকৃত মাত্রা হচ্ছে দৈনিক ৫-৯ মিগ্রা./কেজি- ২টি বিভক্ত মাত্রায়। সর্বোচ্চ ২৫ মি.গ্রা. (বা এর নিচে দৈনিক ১-৩ মি.গ্রা./কেজি-এই মাত্রার উপর ভিত্তি করে)-এর সময় মাত্রা প্রথম সপ্তাহে রাত্রিকালীন সময়ে পুনঃ নির্ধারণ করা উচিত।
আশানুরূপ ফলাফল লাভের জন্য প্রতি ১/২ সপ্তাহের ব্যবধানে ১-৩ মি.গ্রা./কেজি হারে মাত্রা বাড়ানো যেতে পারে (২টি বিভক্ত মাত্রায়)। তবে চিকিৎসার ফলাফলের উপর নির্ভর করে মাত্রা পুনঃ নির্ধারণ করতে হবে। মূত্রজনিত সমস্যা থাকলে: ক্রিয়াটিনিন ক্লিয়ারেন্স যাদের ৭০ মি.গ্রা./মিনিট/ ১.৭৩ মি. ২-এর চেয়ে কম তাদের জন্য প্রাপ্ত বয়স্কদের অর্ধেক মাত্রা সুপারিশক ত।
এসব রোগীর স্থির অবস্থার মাত্রায় পৌঁছাতে দীর্ঘ সময় লাগে। যেসব রোগীর হিমোডায়ালাইসিস হচ্ছে: হিমোডায়ালাইসিসের মাধ্যমে সাধারণ অবস্থার চেয়ে ৪-৬ গুণ বেশি টোপিরামেট বের হয়ে যায়। একই ভাবে দীর্ঘ সময় ব্যাপী হিমোডায়ালাইসিস করলে খিচুনীরোধী কার্যফল লাভের জন্য টোপিরামেটের প্রয়োজনীয় মাত্রা শরীরে কমে যেতে পারে। এটা এড়াতে চাইলে টোপিরামেটের সম্পূরক মাত্রা প্রয়োজন হতে পারে।
তবে নিচের বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত:- ১। কত সময়ব্যাপী ডায়ালাইসিস হচ্ছে ২। ডায়ালাইসিস ব্যবস্থার ক্লিয়ারেন্সের হার ৩। যে রোগীর ডায়ালাইসিস হচ্ছে তার ক্ষেত্রে টোপিরামেটের ক্লিয়ারেন্সের প্রকৃত হার টোপিরামেট ট্যাবলেট গ্রহণের সাথে খাবারের সম্পর্ক নেই।
সতর্কতা ও যে সব ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না:
টোপিরামেট ট্যাবলেট বা এর কোন উপাদানের প্রতি অতি সংবেদনশীলতা থাকলে টোপিরামেট প্রতিনির্দেশিত। ভ্যালপ্রোয়িক এসিডের সাথে টোপিরামেট নিলে এনকেফালোপ্যাথি সহ বা ছাড়া শরীরে এমোনিয়ার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
যেসব রোগীর শরীরে আলাদাভাবে এ ২টির যে কোন ওষুধ সহনীয় ছিল যেসব রোগীর ব্যাখ্যাতীত আলস্য, বমি অথবা মানসিক পরিবর্তন ঘটে তাদের ক্ষেত্রে এনকেফালোপ্যাথি সহ এমোনিয়ার মাত্রাধিক্যের কথা বিবেচনা করতে হবে এবং শরীরে এমোনিয়ার মাত্রা মাপতে হবে।
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া:
সবচেয়ে লক্ষণীয় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে স্বাদ পরিবর্তন এবং মাথা ও দেহের প্রান্ত সমূহে জ্বালাপোড়া করা। কম লক্ষণীর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে আছে মনোসংযোগের অভাব (নির্দিষ্টভাবে বললে শব্দ খোজায় পারদর্শিতার অভাব), বোঝার মতা কমে যাওয়া, অস্থিরভাব, আলস্য, বৃক্কে পাথর, অস্বাভাবিক দৃষ্টি, ওজন হারানো, স্তনে ব্যথা, পেটে ব্যথা, মাত্রাতিরিক্ত ঘামানো, মাসিকে সমস্যা এবং মুখ শুকিয়ে যাওয়া।
অন্য ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া:
প্রচলিত মৃগীরোধী ওষুধ সমূহ যেমন- ফিনাইটোইন, কার্বামাজেপিন এবং ভ্যালপ্রোয়িক এসিডের যে কোনটির সাথে টোপিরামেট দিয়ে চিকিৎসা করলে মিথস্ক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়।
পাশাপাশি এসিটাজোলামাইড অথবা ডাইক্লোরফিনামাইডের মত কার্বোনিক এনহাইড্রেজ প্রতিবন্ধকগুলোর সাথে টোপিরামেট ব্যবহার করলে বৃক্কে পাথর হবার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ডিগক্সিন, কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র অবদমনকারী ওষুধসমূহ, মুখে খাওয়ার জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ এবং হাইড্রোক্লোরথায়াজাইডও টোপিরামেটের সাথে মিথস্ক্রিয়া করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে ব্যবহার:
গর্ভাবস্থায় টোপিরামেটের ক্যাটাগরি ‘সি’। তাই শুধুমাত্র প্রয়োজন হলে এবং ঝুঁকি- উপকারীতার অনুপাত বিবেচনার পর টোপিরামেট দেয়া যেতে পারে। টোপিরামেট মাতৃ দুগ্ধের সাথে নিঃসৃত হয় কিনা পরিস্কারভাবে তা জানা যায়নি। সুতরাং স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে টোপিরামেট ব্যবহারের সময় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
সরবরাহঃ
পিরামেড’২৫ ট্যাবলেট: প্রতি বাক্সে আছে ৫০ টি ট্যাবলেট। পিরামেড” ২০০ ট্যাবলেট : প্রতি বাক্সে আছে ২০ টি ট্যাবলেট।
আরও দেখুনঃ