আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় Flexilax ফ্লেক্সিলাক্স ওষুধের যাবতীয় তথ্য। বাংলাদেশে পাওয়া যায় এরকম বিভিন্ন ওষুধের তথ্য আপনাদের কাছে পৌছে দিতে আমাদের এই আয়োজন।
Flexilax ফ্লেক্সিলাক্স ওষুধের যাবতীয় তথ্য
উপাদান:
বেকলোফেন বিপি। ৫ মি.গ্রা. এবং ১০ মি.গ্রা. ট্যাবলেট।
নির্দেশনা:
স্পাজম, পেশী সংকোচন, ঘুমের সমস্যা, মূত্রথলির ও স্ফিংটারের কার্যক্ষমতায় এবং ডেকুরিটাস আলসার। মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস জনিত স্পাসটিসিটি। মেরুদণ্ডের আঘাত ও মেরুদন্ডে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা সেরেব্রাল জনিত মাংসপেশীর সংকোচন বিশেষতঃ ইনফেন্টাইল সেরেব্রাল পালসী বা নিওপ্লাসটিক দূর্ঘটনাজনিত সেরেব্রোভাসকুলার সমস্যা অথবা ব্রেইনের বিভিন্ন অসুখ টেনশন টাইপ মাথাব্যথা।
মাত্রা ও ব্যবহারবিধি:
ফ্লেক্সিলাক্স (বেকলোফেন) পানি ও খাবারের সাথে খেতে হয়। ফ্লেক্সিলাক্স” (বেকলোফেন) সাধারণতঃ বয়স্কদের ক্ষেত্রে দিনে ৩ বার এবং বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দিনে ৪ বার দিতে হয়। ফ্লেক্সিলাক্স” (বেকলোফেন) সর্বনিম্ন কার্যকরী মাত্রায় দেয়া উচিত প্রশমন প্রক্রিয়ার জন্য নিচের মাত্রা অনুসরণ করা উচিত-
৫ মি.গ্রা. দিনে ৩ বার ৩ দিন
১০ মি.গ্রা. দিনে ৩ বার ৩ দিন
১৫ মি.গ্রা. দিনে ৩ বার ৩ দিন
২০ মি.গ্রা. দিনে ৩ বার ৩ দিন
পরবর্তীতে মাত্রা আরো বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে কিন্তু সৈনিক মোট সর্বোচ্চ মাত্রা ৮০ মি.গ্রা. হতে পারে কিন্তু ক্ষেত্র বিশেষে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর ক্ষেত্রে ফ্লেক্সিলাক্স’ (বেকলোফেন ) দিনে ১০০ থেকে ১২০ মি.গ্রা. প্রয়োজন হতে পারে।
শিশু: সর্বনিম্ন মাত্রায় চিকিৎসা শুরু করা উচিত (০.৩ মি.গ্রা./কেজি/দিন, বিভক্ত মাত্রায়)। সাবধানতার সাথে ১-২ সপ্তাহ বিরতিতে শিশুর প্রয়োজন বিশেষে মাত্রা বাড়ানো উচিত। সাধারণত ০.৭৫ মি.গ্রা.- ২.০০ মি.গ্রা./কেজি/দিন বিভক্ত মাত্রায় ওষুধটি চলতে থাকে। ১০ বছরের অধিক বয়সের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দিনে সর্বোচ্চ ২.৫ মি.গ্রা./কেজি দেয়া যেতে পারে।
সতর্কতা ও যে সব ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না:
বেকলোফেনের প্রতি সংবেদনশীল রোগীদের জন্য এটা প্রতিনির্দেশিত। রেনাল ইমপেয়ারমেন্টের রোগীদের এবং যাৱা দীর্ঘদিন হিমোডায়ালাইসিস নিচ্ছে তাদেরকে সতর্কতার সাথে দিনে ৫ মি.গ্রা. দেয়া উচিত। যারা স্পাজম ছাড়াও অন্যান্য মানসিক সমস্যা, পাগলামি, হতাশা, অস্থিরতায় ভূগছে তাদেরকে সতর্কতার সাথে ওষুধটি দেয়া উচিত যেহেতু তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাগুলির অবনতি হতে পারে।
খিঁচুনির রোগীদের ক্ষেত্রে বেকলোফেনের সাথে পর্যাপ্ত খিঁচুনির ওষুধ নিতে হবে এবং বিশেষ সতর্কতার সাথে অবস্থা পর্যালোচনা করতে হবে। বেকলোফেন দিয়ে চিকিৎসার পর সহজেই খিঁচুনি হতে পারে যা বেকলোফেন নিয়ে চিকিৎসার পর আরও অবনতি হতে পারে।
যাদের আলসার, সেরেব্রোভাসকুলার ডিজিজ, হেপাটিক বা রেনাল বা শ্বাস নালীর সমস্যা আছে যাদের কার্ডিওপালমোনারী বা শ্বাসনালীর পেশীর দূর্বলতা রয়েছে তাদেরও সতর্কতার সাথে দিতে তাদেরকে সতর্কতার সাথে বেকলোফেন দিতে হবে। হবে। বেকলোফেন দিয়ে চিকিৎসার সময় স্নাতন্ত্রের সমস্যার উন্নতি হতে পারে যা মূত্রথলির নিঃসরণ সহজ করে।
তারপরও এটা স্ফিংটারে বেশী চাপ এবং হঠাৎ মূত্রথলিতে মূত্রাধিক্য ঘটাতে পারে। এসব ক্ষেত্রে বেকলোফেন সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা উচিত। স্ট্রোকের রোগীদের জন্য বেকলোফেন খুব বেশি উপকারী নয়। এসব রোগীরা সাধারণত এই ওষুধে কম সহনীয় হয়। হেপাটিক ও ডায়াবেটিসের রোগীদের সঠিক ল্যাবরেটরী পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা উচিত যে বেকলোফেন এসব রোগের অবনতি ঘটাচ্ছে না।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া:
সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে তন্দ্রালুতা, ঘুমঘুম ভাব, ঝিমুনি, দূর্বলতা ও অবসাদ।স্নায়ু: মাথাব্যথা, নিদ্রাহীনতা এবং সামান্য উত্তেজনা, হতাশা, বিভ্রান্তি, পেশীর ব্যথা, খিঁচুনি ইত্যাদি। রক্ত সঞ্চালন: হাইপোটেনশন এবং খুব কম ক্ষেত্রে ঘন ঘন শ্বাস নেয়া, বুক ধড়ফড় করা, বুকে ব্যথা ও মুর্ছা যাওয়া। পরিপাক তন্ত্র।
ক্ষুধামন্দা, কোষ্ঠকাঠিন্য, মুখের শুষ্কতা, স্বাদহীনতা, অ্যাবডোমিনাল ব্যথা, বমিবমি ভাব, ডায়রিয়া, স্টোলে অকাল্টবাড থাকা । মূত্রথলি বার বার প্রস্রাবভাব হওয়া, মূত্র না বের হওয়া, যৌন সমস্যা, ইজাকুলেশন না হওয়া, রাত্রে বার বার প্রস্রাব হওয়া এবং প্রস্রাবে রক্ত আসা।
অন্যান্য র্যাশ, চুলকানি, ফোলা, ওজনবৃদ্ধি, নাক বন্ধতা, চোখে ঝাঁপসা দেখা, হেপাটিক সমস্যা ইত্যাদি । পেশীর টান এমন হতে পারে যে হাঁটা চলায় সমস্যা হয় তখন মাত্রা পুনঃনির্ধারণ করা উচিত। এজন্য দিনের বেলায় কম মাত্রা দিয়ে রাত্রে বেশী মাত্ৰা দেয়া উচিত।
গর্ভাবস্থা ও স্তন্যদানকালে ব্যবহার:
প্রেগন্যানসি ক্যাটাগরি বি গর্ভাবস্থায় বেকলোফেনের নিরাপদ ব্যবহার প্রতিষ্ঠিত নয়। বেকলোফেন প্লাসেন্টা অতিক্রম করে। ঝুকির চেয়ে উপকারিতা বেশী হলেই কেবল গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা যায় যা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শে হতে হবে। মাতৃদুগ্ধে এত সামান্য নিঃসরিত হয় যে তা কোন ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটার জন্য যথেষ্ট নয়।
অন্য ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া :
স্নাতন্ত্রের উপর কাজ করে এমন কোন কিছু যেমন- অ্যালকোহল, অপিয়েট ইত্যাদির সাথে বেকলোফেন ঘুম আরো বাড়ায়। এতে শ্বাসনালীর সমস্যা বেড়ে যেতে পারে । এন্টিহাইপারটেনসিভ ওষুধের সাথে গ্রহণ করলে রক্তচাপ কমে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে এন্টিহাইপারটেনসিভ ওষুধের মাত্রা পুননির্ধারণ করা উচিত।
বেকলোফেন এবং ট্রাইসাইক্লিক এন্টিডিপ্রেসেন্ট এক সাথে খেলে বেকলোফেনের কার্যকারিতা বেড়ে যায় যার ফলে মাসকুলার হাইপারটোনিয়া হতে পারে । পার্কিনসনের রোগীদের ক্ষেত্রে বেকলোফেন এবং লেভোডোপা বা কার্বিডোপা একসাথে দিলে মানসিক বিভ্রান্তি, ভুল বুঝা, মাথাব্যথা, ক্ষুধামন্দা ও উত্তেজনা হতে পারে।
মনো অ্যামাইনো অক্সিডেজের সাথে বেকলোফেন স্নায়ুর নিস্তেজতা ঘটায়। এক্ষেত্রে সতর্কতা সহ মাত্রা পুননির্ধারণ করা উচিত । বেকলোফেন ম্যাগনেসিয়ামের সাথে বা অন্য কোন পদার্থ যা নিউরোমাস্কুলার ব্লকিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে, একসাথে খেলে কার্যকারিতা বেড়ে যাওয়ার কথা।
সরবরাহ:
ফ্লেক্সিলাক্স’ ৫ ট্যাবলেট: প্রতি বাক্সে আছে ৩০ টি ট্যাবলেট । ফ্লেক্সিলাক্স” ১০ ট্যাবলেট: প্রতি বাক্সে আছে ৩০ টি ট্যাবলেট ।
আরও দেখুনঃ